আপনি কি জানতে চান যে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল অথবা খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল এবং খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল। তাহলে আপনি এখন সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজ আমরা ডায়াবেটিসের এই সকল বিষয় নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো।
আজকে আমাদের এই নিবন্ধনে থাকছে ডায়বেটিস কী, ডায়বেটিস কেন হয়, ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা, ডায়বেটিস চিরতরে নিরাময় হবে, ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা, খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল, খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল, বাচ্চাদের ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল, দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায়, ডায়াবেটিস মাপার মেশিনের দাম কত, ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে না, ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায়, ডায়াবেটিস নরমাল কত পয়েন্ট, খালি পেটে ডায়াবেটিস কত থাকে, ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয়, ডায়াবেটিস কত হলে ঔষধ খেতে হবে, ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায় এবং ডায়াবেটিস মাপার সঠিক সময়।
তাহলে বুঝতেই পারছেন আমাদের এই নিবন্ধনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন তবে আশা করছি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর এবং অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন। তাহলে দেরি না করে চলুন আলোচনা শুরু করি.
সুচিপত্র
ডায়বেটিস কী?
সর্ব প্রথমে আমাদের জানতে হবে আসলে ডায়াবেটিস কি? বর্তমান বিশ্বে বহুল আলোচিত একটি রোগ হল ডায়াবেটিস। এই রোগের সংক্রমণ দিন দিন অনেক বেশি বেড়ে চলছে, যার কারণে রোগটি এখন আমাদের সবার কাছে পরিচিত। সঠিক সময়ে সঠিক নিয়ম কানুন মেনে না চললে এই রোগ মৃত্যুরও কারণ হতে পারে।
তাই এ রোগের জন্য সচেতনতা জরুরী। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপ হতে পাওয়া গেছে, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত রোগী রয়েছে এক কোটি ১০ লাখ যার মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ। বর্তমানে পৃথিবীতে প্রতি সাত সেকেন্ডে অন্তত একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়।
ডায়বেটিস কেন হয়ঃ
ডায়াবেটিস হল একটি দীর্ঘস্থায়ী হরমোন সংশ্লিষ্ট রোগ। এটিকে বহুমূত্র রোগ বা মধুমেহ নামেও অবিহিত করা হয়। মূলত ইনসুলিন এর অভাবে এ রোগ হয়। অর্থাৎ,দেহে অগ্ন্যাশয় যদি যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীর যদি উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহারে ব্যর্থ হয়, তাহলে যে রোগ হয় তা হলো ‘ডায়াবেটিস’ বা ‘বহুমূত্র রোগ’। এই রোগের ফলে রক্তে শকর্রার উপস্থিতিজনিত অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়।
সহজ কথায় বলা যায়, কোনো খাবার গ্রহণ করার পর আমাদের শরীর সেই খাদ্যের কে ভেঙে গ্লুকোজে রুপান্তরিত করে। অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামের যে হরমোন নিসৃত হয়, তার নির্দেশে শরীরের কোষগুলো গ্লুকোজকে গ্রহণ করে। এই গ্লুকোজ শরীরের শক্তি হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে শরীরে যখন ইনসুলিন তৈরি হয় না, অথবা যখন এই ইনসুলিন ঠিক মতো কাজ না করে তখনই ডায়াবেটিস হয়। এর ফলে রক্তের মধ্যে চিনি বা গ্লুকোজ জমা হতে থাকে।
ইনসুলিন কী? (Insulin)
খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল:
আমেরিকার ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশনের (American Diabetes Association) এর নিয়ম অনুযায়ী যদি এইচবিএ১সির মান ৫.৭-এর নিচে থাকে তবে তাকে স্বাভাবিক বা নরমাল বলে বিবেচনা করা হয়। আবার যদি এইচবিএ১সির মান ৬.৫-এর বেশি হয় তখন ধরে নেয়া হয় ডায়াবেটিস আছে। এবং এই মান যদি ৫.৭ থেকে ৬.৫-এর মাঝে মাঝি থাকে তখন প্রি-ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিসের পূর্বাবস্থা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

একজন ব্যক্তির খালি পেটে ডায়াবেটিস রিডিং থাকে সাধারণত ১০০ পয়েন্টের এর নিচে । আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মতে খালি পেটে ১০০ এর নিচে এবং খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে ১৪০ এর নিচে থাকা নরমাল। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রাথমিক লক্ষ্য হল খালি পেটে ৭০ থেকে ১৩০ এবং খাবার শুরু করার দুই ঘন্টা পরে ১৮০ এর কম।
ডায়াবেটিস কত হলে নরমালঃ
আমরা জানতে পেরেছি যে, রক্তে চিনি বা গ্লুকোজ এর উপস্থিতি এর কারণে ডায়াবেটিস হয়।ডায়াবেটিস এর পরিমাণ টেস্ট করাকেই ডায়াবেটিস টেস্ট বলে। ডায়াবেটিস টেস্টের মাধমে রক্তে চিনি বা গ্লুকোজের পরিমাণ মাপা হয়। এই টেস্টের মাধ্যমে জানা যায় ডায়বেটিস লেভেল কতটা স্বাভাবিক বা কতটা গুরুতর।
ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি তে রোগীকে প্রথমে খালি পেটে রক্তের সুগার দিতে হয় এবং এর পর রক্ত দিয়ে ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার পর রক্ত দিতে হয়। যদি এখানে ব্লাড সুগার ৬ দশমিক ১-এর নিচে, তাহলে তাকে নরমাল বা স্বাভাবিক বলে ধরা হয়।
অন্যদিকে গ্লুকোজ খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর রক্ত দিয়ে যে টেস্টটা করা হবে, সেটা যদি ৭ দশমিক ৮-এর নিচে আসে, তাহলে আমরা তাকে স্বাভাবিক বলে ধরে নিতে পারি।
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকাঃ
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য পুষ্টিকর খাদ্য এবং শরীরচর্চা স্বাস্থ্যকর জীবনধারার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।অন্যান্য সুবিধার পাশাপাশি, একটি স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা অনুসরণ করা এবং সক্রিয় থাকা রোগীকে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা সঠিক পরিসরে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
যদি আপনার ডায়বেটিস থাকে,তবে আপনি কী খেতে চান, আপনি কতটা খান এবং আপনি কখন খাবেন তার প্রতি লক্ষ রাখা আপনার রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চলাফেরা করা এবং আপনি যা খান এবং পান করেন তাতে পরিবর্তন আনা প্রথমে অনেক কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু চেষ্টা করলেই আপনি আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে পারবেন।
আপনি হয়ত ভাবতে পারেন যে,ডায়াবেটিস হওয়া মানে আপনি যে খাবারগুলি পছন্দ করেন তার কিছু হয়র একেবারে ছেড়ে দেয়া লাগবে। কিন্তু আসলে তা না। এখনও আপনার প্রিয় খাবার খেতে পারেন,তবে আপনাকে কম পরিমাণে খেতে হবে বা কম ঘন ঘন সেগুলি খেতে হবে।ডায়াবেটিস হলে সমস্ত খাদ্য গ্রুপ থেকে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
খাবারের গ্রুপগুলো-
যেসব সবজি খাওয়া যাবে,
ননস্টার্কি: ব্রকলি, গাজর, সবুজ শাক, গোলমরিচ এবং টমেটো ইত্যাদি।
স্টার্চি: আলু, ভুট্টা এবং সবুজ মটর ইত্যাদি।
যেসব ফল খাওয়া যাবে,
কমলা, তরমুজ, বেরি, আপেল, কলা এবং আঙ্গুর ইত্যাদি।
শস্য-আপনার খাবারের বড় অংশ শস্য হওয়া উচিত যেমন গম, চাল, কর্নমিল, বার্লি এবং রুটি, পাস্তা ইত্যাদি।
যেসব প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে,
- চর্বিহীন মাংস
- চামড়া ছাড়া মুরগি বা টার্কি
- মাছ,ডিম,বাদাম এবং চিনাবাদামশুকনো মটরশুটি এবং নির্দিষ্ট মটর, যেমন-ছোলা,
- যেসব দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া যাবে,
- ননফ্যাট বা কম চর্বিযুক্ত,দই,পনির।
ডায়াবেটিস হলে যা যা খাবেন না বা কম পরিমাণে খাবেন :
- * কখনো বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না
- * চিনির পরিমাণ বেশি থাকে এমন খাদ্য বা পানীয় বর্জন করতে হবে
- * কাঁচা লবণ খাওয়া যাবে না
- * বেশি ভাজা ও তৈলযুক্ত কোন খাবার খাওয়া যাবে না
- * দুধ খাবার ক্ষেত্রে ফ্যাট কমিয়ে রেখে খেতে হবে
- * ফ্যাট ছাড়া পনির খেতে হবে
- * ভাত, আলু, কলা এবং গাজর ও অন্যান্য শর্করা যুক্ত খাবার শরীরে গ্লুকোজ বাড়ায় তাই এসব কম খেতে হবে।
এসব নিয়ম মেনে চলা একটু কঠিন মনে হিতে পারে কিন্তু শরীর এ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এসব মেনে রাখা জরুরি।
ডায়বেটিস চিরতরে নিরাময় হবে?
এক কথায় বলতে গেলে, ডায়বেটিস সম্পূর্ণভাবে নিরাময় সম্ভব না। যদিও ডায়াবেটিস নিরাময়যোগ্য নয়, একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময়ের জন্য উপশম করে থাকতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, “বর্তমানে ডায়াবেটিসের কোনো নিরাময় নেই, তবে রোগটি উপশমের দিকে যেতে পারে”।
নির্দিষ্টভাবে কোন কারণে উপশম হয়,সে বিষয়ে ডাক্তাররা চূড়ান্ত একমত হননি, তবে তারা সকলেই একটি উল্লেখযোগ্য কারণ সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। সেটা হল A1C স্তর 6 শতাংশের নিচে থাকা। A1C স্তর বলতে 3 মাসের মধ্যে একজন ব্যক্তির রক্তে শর্করার মাত্রা নির্দেশ করে।
তবে একজন ব্যক্তি 20 বছর ধরেও যদি রক্তে শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখে, তবুও ডাক্তার তার ডায়াবেটিসকে নিরাময় বলে মনে করবেন না বরং তার পরিবর্তে উপশম বলে মনে করবেন।
এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস থেকে উপশম হওয়া সহজ যা ব্যায়ামের রুটিন বা খাবারের পরিবর্তন করার মতোই।
ডায়বেটিস এর লক্ষণ এবং প্রতিকারঃ
ডায়াবেটিস হল রক্তে চিনি বা গ্লুকোজ এর উপস্থিতি। রক্তে চিনি বা গ্লুকোজ পরিমাণ কতটা বেড়েছে তার উপর নির্ভর করে ডায়াবেটিসের লক্ষণ ভিন্ন ভিন্ন হয়। কিছু লোক,বিশেষ করে যাদের প্রিডায়াবেটিস আছে,তারা কখনও কখনও লক্ষণগুলি অনুভব করতে পারে না। তবে অন্যটির ক্ষেত্রে লক্ষণগুলি দ্রুত দেখা দেয় এবং আরও গুরুতর হয়।
ডায়াবেটিসের কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ হলঃ
- তৃষ্ণা অনেক বেড়ে যাওয়া,
- ঘন মূত্রত্যাগ,
- তীব্র ক্ষুধা,
- ওজন হ্রাস,
- প্রস্রাবে কিটোনের উপস্থিতি (কেটোন হল পেশী এবং চর্বি ভাঙার উপজাত যা পর্যাপ্ত ইনসুলিন না থাকলে ঘটে),
- ক্লান্তি,
- বিরক্তি,
- ঝাপসা দৃষ্টি,
- ঘাঁ বা কাঁটা ছেড়া অতি ধীরে নিরাময় হওয়া।
ডায়বেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়ঃ
রক্তে শর্করার পরিমাণ কত হলে মানুষ মারা যায় তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না বা এমন কোন পরিমাপক নেই। তবে ডাক্তারের ডায়াবেটিসের কারণে গুরুতর স্বাস্থ্যগত প্রভাব দেখা দিতে পারে যা একজন ব্যক্তির আয়ুকেও প্রভাবিত করে এবং ডায়াবেটিস এর কারণে মৃত্যুও হতে পারে।
ডায়াবেটিস প্রভাব কেমন হবে তা বিভিন্ন জিনিসের উপর নির্ভর করে। যেমন একজন ব্যক্তি কত তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় এবং চিকিত্সা পায় এবং তাদের ডাক্তার কতটা ভালভাবে এই অবস্থা পরিচালনা করে। তাছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির খাদ্য অভ্যাস এবং চলাফেরা। একজন ব্যক্তির বয়স,জীবনধারার এবং চিকিৎসার উপরেও তার আনুমানিক আয়ুষ্কাল নির্ভর করে।
যেমন-একজন ৫৫ বছর বয়স্ক মানুষের আনুমানিক আয়ুষ্কাল ২৪.৭ বছর হলে,তা একজন ডায়বেটিস আক্রান্ত ব্যাক্তির ক্ষেত্রে ১৩.২ থেকে ২১.১ বছর।
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়ঃ
ডায়বেটিস রোগীদের মাঝে কিছু নিউরোপ্যাথলজিক্যাল উপসর্গ (হাতে-পায়ে ঝি ঝি করত্ব পারে, জ্বালাপোড়া,ব্যথা করা,হেঁটে যাবার সময় পায়ের তলায় নরমাল একটা সেনসেশন হওয়া) দেখা দিতে পারে। কিন্তু যদি অটোনমিক নার্ভ আক্রান্ত হয়,তবে দেহের ভিতরের অনেক অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে সমস্যা হতে পারে।
সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হল অনেক ক্ষেত্রে অটোনোমিক নিউরোপ্যাথি রোগীর রক্তে গ্লুকোজ কমে গেলে সে তা বুঝতে উঠতে পারে না। যার কারণে তার গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখার সময় তাকে অনেক বেশু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
এছাড়াও ডায়বেটিস এর কারণে চোখের সমস্যা, ডায়াবেটিসজনিত কিডনি সমস্যা, এবং ডায়াবেটিসজনিত পায়ের নার্ভ সমস্যা হতে পারে। তবে এসব সমস্যা শুনে ভয়ের কিছু নেই। যদি আমরা যথাযথ খাদ্য অভ্যাস এবং শরীর চর্চার মাধমে ডায়বেটিস সুনিয়ন্ত্রণ এ রাখতে পারি,তবে আমরা এসব জটিল রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারব।
কি খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয়ঃ
সঠিক খাবার সঠিক পরিমাণে না খেলে যেমন ডায়াবেটিস বাড়ে তেমনি খাবারের মাধ্যমে ডায়াবেটিস কমানোও সম্ভব। আঁশ সমৃদ্ধ খাবার, শাক-সবজি, শীম, পূর্ণশস্যজাতীয় খাবার এবং বাদাম নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। এমন কিছু খাবার হলঃ
- দই – এতে ক্যালোরি অনেকটা কম থাকে বলে রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়তে দেয় না।
- শিম – এতে গ্লুকোজ এর পরিমাণ কম থাকে।
- খেজুর – কেউ নিয়মিত খেজুর খেলে তার রক্তে সুগারের মাত্রা বাড়বে না।
- কুমড়ো বীজ – কুমড়ো বীজ খেলে অতিভোজনের ইচ্ছা কমে যায়।
- চিয়া বীজ – এটি এমন এক খাবার যা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
ডায়াবেটিস মাপার নিয়মঃ
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের রক্তের গ্লুকোজ টেস্ট করা অত্যন্ত। আর এই জরুরি কাজটি শুধু এক ফোঁটা রক্ত ব্যবহার করেই করা যায়। সেই টেস্ট এর জন্য প্রয়োজন হয় গ্লুকোমিটার যন্ত্রটি। সেটি থাকলে ঘরে বসেই নিজেই নিজের কাজটি করতে পারেন আক্রান্ত রোগী।
বাজারে নানা মানের ও ব্র্যান্ডের গ্লুকোমিটার পাওয়া যায় আজকাল। গ্লুকোমিটার মানসম্মত না হলে সঠিক ফলাফল না-ও পেতে পারেন তাই এদিকে সতর্ক থাকা উচিত। হঠাৎ কোন জটিলতা এড়াতে যন্ত্রটি হাতের কাছে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গ্লুকোমিটার দিয়ে কতদিনে কতবার রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা দরকার, তা নির্ভর করে ডায়াবেটিসের ধরণ,চিকিৎসা এর ধরণ এবং অন্য কোন অসুস্থতা আছে কিনা তার উপর।
যেমন-ডায়াবেটিস আক্রান্ত যারা ইনসুলিন নিচ্ছেন, তাঁদের সপ্তাহে কমপক্ষে তিন-চার দিন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ডায়াবেটিস টেস্ট করা দরকার। অন্যথায়,স্বাভাবিক অবস্থায় সপ্তাহে একবার গ্লুকোমিটার এর সাথে ডায়াবেটিস টেস্ট করা ভাল। তবে ডায়াবেটিস খুব অনিয়ন্ত্রিত হলে, বা অন্য কোনো অসুস্থতা যেমন-জ্বর,কাঁশি,টাইফয়েড ডায়রিয়া ইত্যাদি থাকলে, বা অন্য কোনো কারণে স্বাভাবিক রুটিনের ব্যতিক্রম ঘটলে আরও ঘন ঘন পরীক্ষা করার প্রয়োজন।
বলা যায়,ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক। যার কোন পরিচিত নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা নেই। তবে সঠিক সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা,খাদ্য অভ্যাস, শরীর চর্চার মাধ্যমে এর ঝুঁকি কমানো কমানো যায়। কিছু প্রধান ঝুঁকি হল অন্ধত্ব, কিডনি ক্ষতি এবং হার্ট অ্যাটাক।
ঝুঁকি থেকে দূরে থাকতে রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা খুব বেশি নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণের একটি অসুবিধা হল,এই ধরনের প্রচেষ্টা হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধির চেয়ে অনেক গুরুতর জটিলতা তৈরি করে। গবেষকরা এখন ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য বিকল্প পদ্ধতি খোঁজেছেন।বর্তমানে ডায়াবেটিস নতুন শতাব্দীর অনেক নড় একটি চাহিদাপূর্ণ গবেষণা বিষয় এ পরিণত হয়েছে।